দিঘাপতিয়া পিএন উচ্চ বিদ্যালয়ের ইতিকথা
দিঘাপতিয়া ও আশপাশের জনপদে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে এবং জ্ঞান বিস্তারের মহৎ উদ্দেশ্যে নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের উত্তর পাশে, বর্তমান উত্তরা গণভবনের অর্ধ কিলোমিটার পূর্বে, ১৮৫২ সালের ১ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠিত হয় দিঘাপতিয়া পিএন উচ্চ বিদ্যালয়। প্রায় ৫ একর ৭৯ শতাংশ জমিতে প্রতিষ্ঠিত এই বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন দিঘাপতিয়া রাজবংশের চতুর্থ দানবীর রাজা প্রসন্ন নাথ রায় বাহাদুর।
২০২৫ সালে বিদ্যালয়টির ১৭৩ বছর পূর্ণ হয়েছে। রাজশাহী বিভাগ তথা সমগ্র উত্তরবঙ্গের মধ্যে এটি নাটোর জেলার প্রাচীনতম বিদ্যাপীঠগুলোর অন্যতম। শিক্ষার অপ্রতুলতা দূরীকরণ ও সাধারণ মানুষকে জ্ঞানের আলোয় উদ্ভাসিত করার জন্য রাজা প্রসন্ন নাথের এই উদ্যোগ ইতিহাসে এক অনন্য দৃষ্টান্ত।
বিদ্যালয় সংলগ্ন বিরাট খেলার মাঠ আজও এলাকার সবচেয়ে বড় খেলার মাঠ।
প্রবেশদ্বারে রয়েছে এক অতি প্রাচীন বটবৃক্ষ, যার বয়স নির্ধারণ করা দুষ্কর।
বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সময় কলকাতার স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ায় ১,০৮,৪০০ টাকার “পি এন ট্রাস্ট ফান্ড” গঠন করা হয়েছিল, যার সুদের আয় বিদ্যালয়ের উন্নয়নে ব্যয় করার কথা ছিল। বর্তমানে এ অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকে গচ্ছিত বলে জানা যায়।
১৮৫২ সালেই রাজা বাহাদুর শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিষ্ঠা করেন একটি পাঠাগার। ইংরেজি, বাংলা, উর্দু, ফারসি, ইতিহাস, বিজ্ঞান, অর্থনীতি ও দর্শনসহ প্রায় ১,৪৭০টি দুর্লভ গ্রন্থ এতে সংরক্ষিত ছিল।
এর মধ্যে “ভিক্টোরিয়া অ্যাটলাস”, ফেরদৌসীর শাহনামা, শেখ সাদীর গুলিস্তাঁ বোস্তাঁ এবং চারখানা সোনালি মলাটের ইংরেজি সাহিত্যকর্ম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকবাহিনীর হাতে অনেক মূল্যবান বই নষ্ট বা লুণ্ঠিত হয়।
এখনো “এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা”র সম্পূর্ণ খণ্ড পাঠাগারে সংরক্ষিত আছে, যদিও বয়সের কারণে সেগুলো নষ্টপ্রায়।
রাজা বাহাদুরের দানকৃত খাঁটি কাঁসার ঘণ্টা আজও প্রতিদিন বিদ্যালয়ে বাজে—এর বয়স এখন ১৭১ বছর।
বিদ্যালয়ের প্রাচীন কাঠের আসবাবপত্র আজও অতীতের স্মৃতি বহন করে।
বহু খ্যাতিমান ব্যক্তিত্ব এই বিদ্যালয় পরিদর্শন করেছেন ও পরিদর্শন-বইতে স্বাক্ষর রেখেছেন।
জর্জ ল্যান্স লেট হেয়ার – তৎকালীন বাংলার গভর্নর (১৯০৮ সালের ১৫ ডিসেম্বর)
মোমাস ডেভিড গিবসন ব্যারন কারমাইকেল – গভর্নর (১৯১৬)
লরেন্স জন লুমলি ডান্ডাস কার্ল অফ রোনালশে – গভর্নর (১৯১৯)
১. বাবু দ্বিজেন্দ্র নাথ সাহা – ১৯০৬ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম স্থান; পরবর্তীতে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট।
২. বাবু বসন্তকুমার ভৌমিক – এম.আর.সি.পি (লন্ডন), রংপুর জেলার সিভিল সার্জন।
৩. বাবু জ্ঞানেন্দ্রনাথ মৈত্র – এম.এ ইংরেজিতে প্রথম স্থান; ভাগলপুর কলেজের অধ্যাপক।
৪. মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন – কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফারসি মাধ্যমে বি.এ. ডিস্টিংশনসহ উত্তীর্ণ; নাটোরের দ্বিতীয় মুসলিম স্নাতক।
৫. এ.এইচ. মোহাম্মদ নওয়াজেস উদ্দিন চৌধুরী – ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট (পাস: ১৯২৫)।
৬. মহসিন আলী মৃধা – কুষ্টিয়া জেলার এস.ডি.ও।
৭. প্রখ্যাত ঐতিহাসিক স্যার যদুনাথ সরকার – “আওরঙ্গজেব” জীবনীকার।
৮. আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জনাব জুনাইদ আহমেদ পলক-এর পিতা মরহুম ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ – ১৯৪৭ সালে মেট্রিক পাস।
৯. সাবেক ভূমি উপমন্ত্রী মরহুম ডা. নাসির উদ্দিন তালুকদার – এই বিদ্যালয়ের ছাত্র।
এই তালিকা আরও দীর্ঘ; দেশে-বিদেশে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দিঘাপতিয়া পিএন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা আজও কৃতিত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করছেন।
দিঘাপতিয়া রাজবংশের গৌরবোজ্জ্বল উত্থান শুরু হয় ১৭৩৪ খ্রিষ্টাব্দে। এই রাজপরিবারের উদার দান ও জনহিতকর কাজের ফলেই ১৮৫২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এই ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
আব্দুল্লাহ আল মনসুর (মিন্টু)
দিঘাপতিয়া পি.এন. হাই স্কুলের সাবেক সিনিয়র শিক্ষক (সামাজিক বিজ্ঞান) জনাব আব্দুল্লাহ আল মনসুর, যিনি বর্তমানে বিদ্যালয়ের সভাপতি হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন (ফোন: +৮৮০ ১৭১৬৫৭৩০৭৭)।
জনাব আল মনসুর দীর্ঘ সময় ধরে বিদ্যালয়ের শিক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রমকে আধুনিক প্রযুক্তির সাথে সংযুক্ত করতে অশেষ পরিশ্রম করেছেন। তাঁর দূরদর্শিতা, দৃঢ় সংকল্প এবং নিবেদিত নেতৃত্বের ফলে বিদ্যালয়টি কেবল একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়, বরং প্রযুক্তি-নির্ভর, আধুনিক ও ফলপ্রসূ ব্যবস্থাপনার একটি আদর্শ উদাহরণ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
তিনি বিদ্যালয়ের প্রতিটি কার্যক্রম—শিক্ষার্থীদের ভর্তি প্রক্রিয়া, ফলাফল যাচাই, ক্লাসরুম পরিচালনা, শিক্ষক ও অভিভাবক সংযোগ—কে অনলাইন ও ডিজিটাল ব্যবস্থার মাধ্যমে আরও সহজ, নিরাপদ এবং কার্যকরভাবে সম্পন্ন করতে সক্ষম করেছেন।
জনাব আব্দুল্লাহ আল মনসুরের অসাধারণ নেতৃত্ব, পরিকল্পনা ও অক্লান্ত প্রচেষ্টা বিদ্যালয়কে শিক্ষার মানোন্নয়ন ও প্রশাসনিক দক্ষতার নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে। তাঁর অবদান বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের জন্য একটি অনুপ্রেরণার চিরন্তন উৎস হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
বার | শ্রেণি | সমাবেশ | ১ম সেশন | ২য় সেশন | ৩য় সেশন | ৪র্থ সেশন | বিরতি | ৫ম সেশন | ৬ষ্ঠ সেশন | ৭ম সেশন |
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
রবিবার থেকে বৃহস্পতিবার | সময় | ৯:৪৫-১০:০০ | ১০:০০-১০:৫০ | ১০:৫০-১১:৪০ | ১১:৪০-১২:৩০ | ১২:৩০-০১:২০ | ১:২০-২:০০ | ২:০০-০২:৪০ | ২:৪০-৩:۲۰ | ৩:২০-৪:০০ |
৬ষ্ঠ | স মা বে শ |
বাংলা ১ম/২য় SR |
গণিত AR |
বিজ্ঞান AK/DM |
ইংরেজি SI/T.F |
বিজ্ঞান MR |
কৃষি/তথ্য MI |
ইতিহাস AM |
||
৭ম | বাংলা ১ম/২য় AM |
গণিত DM |
ইতিহাস SR |
বিজ্ঞান MI |
ইসলাম/কৃষি AK |
ইংরেজী ১ম/২য় T.F |
কৃষি/তথ্য DM |
|||
৮ম | বিজ্ঞান AR |
ইসলাম/হিন্দু ধর্ম AK/SR |
বাংলা ১ম/২য় AM |
গণিত MR |
ইংরেজী ১ম/২য় T.F |
ইতিহাস DM |
কৃষি/তথ্য MR |
|||
৯ম | বিজ্ঞান MI |
গণিত MR |
ইংরেজি ১ম/২য় T.F |
বাংলা ১ম/২য় AM |
গ্রুপ AR/SI |
কৃষি/তথ্য SR |
ইসলাম/হিন্দু ধর্ম AK |
|||
১০ম | গণিত MR |
ইংরেজি ১ম/২য় T.F |
বিজ্ঞান MI |
গ্রুপ AR/DM |
বাংলা ১ম/২য় AM |
ইসলাম/হিন্দু ধর্ম AK/AR |
কৃষি/তথ্য MI |
আপনার সন্তানের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত নিন আজই।
যোগাযোগ করুন